আওয়ামী লীগের পাশাপাশি নিজেদের শক্তি সামর্থ্যের জানান দিতে এবার মাঠে নামছে দলের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। সংগঠনের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আগামী ১১ নভেম্বর রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহাসমাবেশ করবে দেশের সর্ববৃহত্ এই যুব সংগঠনটি। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ নির্বাচনের আগে এই যুব মহাসমাবেশের মধ্যদিয়ে ১০ লক্ষাধিক নেতাকর্মী সমাগম ঘটিয়ে নিজেদের শক্তির মহড়া দেখাবে সংগঠনটি।
দীর্ঘদিন পর ঢাকায় নিজেদের শক্তির জানান দিতে চান যুবলীগের নেতারা। ঐ দিন দেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা থেকে শুরু করে গ্রাম থেকে পর্যন্ত নেতাকর্মীরা যুব মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দেবেন। এই ব্যাপারে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, রাজপথ কাদের, তা আগামী ১১ নভেম্বর দেখিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায়। ওদের নৈরাজ্যের জবাব যুবলীগ একলাই দিতে পারে, তা প্রমাণ করব ইনশাআল্লাহ।
এরই মধ্যে সংগঠনের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে নগর জুড়ে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সংগঠনের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় যুব মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি ১০ দিন আগে থেকেই নিতে শুরু করেছে যুবলীগ। যুব মহাসমাবেশের মাধ্যমে সরকারবিরোধীদের নিজেদের শক্তির জানান দিতে চান সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এ লক্ষ্যে প্রতিদিনই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করছে। প্রস্তুতি সভা হচ্ছে দেশের সব জেলা-উপজেলায়।
সর্বশেষ গত শনিবার যুবলীগের নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সভা করে সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি। শুক্রবার ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ২য় তলায় বিকাল ৩টায় যুব মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ‘ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তর’ বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। এর আগে ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ১১ নভেম্বর যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহাসমাবেশ সফল করতে ‘ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ’-এর কার্যালয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ অক্টোবর বুধবারও নগর নেতৃবৃন্দ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের দিন স্বরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশের শোডাউন নিয়ে আলোচনায় বসেন। এর আগে গত ২২ অক্টোবর যুব মহাসমাবেশ সফল করতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটোরিয়ামে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও সব শাখার সমন্বয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় ঐ সভায় ১০টি উপকমিটির নাম ঘোষণা করা হয়।
এগুলো হলো-দপ্তর উপকমিটি, সাংস্কৃতিক উপকমিটি, স্বাস্থ্য উপকমিটি, তথ্যপ্রযুক্তি উপকমিটি, শৃঙ্খলা উপকমিটি, প্রচার-মিডিয়া উপকমিটি, প্রকাশনা উপকমিটি, অভ্যর্থনা উপকমিটি, আপ্যায়ন উপকমিটি, মঞ্চ ও সাজ-সজ্জা উপকমিটি। এ সময় শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, আপনারা জানেন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায়। ওদের এই নৈরাজ্যের জবাব সংগঠন হিসেবে যে যুবলীগ একাই দিতে পারে তা ১১ নভেম্বর এই যুব মহাসমাবেশের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করব। আপনাদের কাছে আমার প্রত্যাশা, আপনারা এই মহাসমাবেশ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে আপনাদের সর্বসাধ্য দিয়ে ১১ নভেম্বর সফল করবেন। অর্থাত্ যুবলীগকে সফল করার দায়িত্ব এখন আপনাদের কাঁধে। আমি জানি আপনারা পারবেন। যুবলীগ অসাধ্য সাধন করা এক সংগঠন।
যুব মহাসমাবেশে সারা দেশ থেকে অন্তত ১০ থেকে ১২ লাখ নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। তিনি বলেন, আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আগামী ১১ নভেম্বর আবারও প্রমাণিত হবে, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছেন। বিশেষ করে দেশের যুব সমাজ যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল তা আমাদের যুব মহাসমাবেশে প্রমাণিত হবে। যুবলীগ মিডিয়া ট্রায়ালয়ে নয়, সত্যিকার অর্থে যুব মহাসমাবেশে লাখ লাখ যুবকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করবে রাজপথ বিএনপির নয়, যুবলীগ তথা আওয়ামী লীগের।
আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এমপি বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত গোটা বাংলাদেশে যে নৈরাজ্য ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে তার জবাব যে যুবলীগ সংগঠন হিসেবে যে কোনো সময় দেওয়ার সক্ষমতা রাখে সেই প্রমাণ এই মহাসমাবেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বাধীনতাবিরোধীরা যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তাতে রাজনৈতিক শক্তি এবং সামর্থ্য প্রদর্শন করা এখন অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।