বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন

ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেট্রো বন্ধ থাকলে কেউই আর উৎসাহী হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১৮ বার পঠিত
আমরা ঢাকার বাসিন্দা, জাপানের না। আমাদের কালবৈশাখী আছে, লুঙ্গি-পলিথিন প্রতিদিন লাইনে আটকে যাবে। তাহলে কী করবেন? প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন বন্ধ রাখবেন? মেট্রো রেলের জন্য মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেট্রো বন্ধ থাকলে কেউই আর উৎসাহী হবে না।
আরো পড়ুন: আফগানদের সিরিজ জয় (২-১) 

আহসান হাবীব নোবেল নামের এক ব্যক্তি গতকাল সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এভাবেই নিজের কথা লিখেছেন। তিনি মেট্রো রেলের নিয়মিত যাত্রী। গত এক মাসে তিনি ৩০ থেকে ৪০ বার উত্তরা থেকে মেট্রোতে ভ্রমণ করেছেন। তিনি লেখেন, ‘মেট্রোতে ভ্রমণের কারণে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে, এ যেন দিন দিন হিতে বিপরীত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কোনো দিনও মেট্রো ঠিকমতো চলতে পারবে না।’

গতকাল সকাল আনুমানিক সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মেট্রো রেলের চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল। কারণ মেট্রোর রেলপথে বিদ্যুতের তারে একটি ঘুড়ি এসে আটকে যায়। আগের দিন রবিবারও মেট্রো রেলের একটি পথে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল। কারণ ওই একই বিদ্যুতের তারে ঘুড়ি আটকে যাওয়া। গত রবিবার একটি লাইন বন্ধ থাকলেও অন্যটি ছিল সচল। এভাবে ঘুড়ির কারণে মেট্রোতে চড়ে ঘোরাঘুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা ব্যাহত হচ্ছে।অনেকটা কাছাকাছি কারণে চলতি বছরের প্রথম দিন দুই ঘণ্টা মেট্রো রেল বন্ধ ছিল। ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ওড়ানো ফানুস এসে বিদ্যুতের তারে আটকে ছিল। এতে পরদিন সকালে ফানুসগুলো অপসারণ না করা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করা যায়নি।মেট্রো রেলের বাস্তবায়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, মেট্রো রেলের ওপর হ্যাঙ্গারের মতো একটি ডিভাইস আছে, যেটি তারের সঙ্গে স্পর্শ করে ট্রেনটিকে সামনে নিয়ে যায়। সেই ডিভাইসটি তার থেকে বিদ্যুৎ নিতে পারলে ট্রেনটি সামনে এগোবে। এই দুটি অংশের মধ্যে যদি কিছু লেগে থাকে তাহলে আগুন ধরে যাবে। আর আগুন ধরলে সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাবে।

পর পর দুই দিন ঘুড়ি আটকে মেট্রো রেল বন্ধ থাকার কারণে এখন প্রশ্ন উঠছে, এর সমাধান কোথায়? পরীক্ষামূলক চলাচলের সময় কি এ জাতীয় সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি মেট্রো কর্তৃপক্ষের?ডিএমটিসিএলের পরিচালক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) নাসির উদ্দিন আহামেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে স্পষ্টভাবে কোনো জবাব দেননি। বিরক্তির সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এত ছোট একটি বিষয়কে বড় করে দেখার কিছু নেই। একটি ঘুড়ি সরাতে ১০ মিনিটও সময় লাগে না।’মেট্রোর রেলপথে দুটি লাইন রয়েছে। গত রবিবার সারাক্ষণ একটি লাইনে ট্রেন চলেছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও (ডাউন লাইন) আসার নিয়মিত পথটি বন্ধ ছিল। সে ক্ষেত্রে আগারগাঁও থেকে উত্তরামুখী (আপ লাইন) একটি লাইনে ট্রেন চলাচল করেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে ঘুড়ি অপসারণ করা হয়।

গতকাল অবশ্য ঘুড়ি এমন জায়গায় আটকায় যাতে একটি লাইনেও ট্রেন চলতে পারছিল না। ফলে মেট্রোর পুরো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঘুড়ি অপসারণ করা হয়। এই সময় প্রায় এক ঘণ্টা মেট্রোর চলাচল বন্ধ ছিল।

ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬-এর উপপ্রকল্প পরিচালক (জনসংযোগ) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) ঘুড়ি আটকে যাওয়ার ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যা থেকে মাইকিং করা হয়েছে। আগারগাঁও থেকে পল্লবী পর্যন্ত মাইকিং করা হয়। আজ (গতকাল) পল্লবীতে ঘুড়ি পড়ল। আসলে মানুষের সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

কখন আটকাল ঘুড়ি?: গত রবিবার সকাল থেকেই এক পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু সোমবার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয় সাড়ে ৯টার কাছাকাছি সময়। এতে বোঝা যায়, ট্রেন চলাচল শুরুর পর ঘুড়িটি এসে আটকায়।

মেট্রো রেলের কাজ করার ধরন অনুযায়ী, যাত্রী পরিবহন শুরুর আগে প্রতিদিন সকাল ৭টায় একটি খালি ট্রেন ধীরে চালিয়ে সব কিছু পরীক্ষা করে দেখা হয়। এটিকে বলা হয়, সুইপ ট্রেন। গতকাল সুইপ ট্রেনে ঘুড়ি ধরা পড়েনি।

আরো পড়ুন: শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..