পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যায়োন্নয়ন ইস্যুতে চলমান লাগাতার কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘটের ১০তম ও ১১তম দিনে রেজিষ্ট্রার অপসারণের দাবি তোলায় দ্বিধাবিভক্ত গ্রুপে পাল্টা-পাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুনঃ গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরেকে আবারও আটকানোর চেস্টা
পরিবর্তিত ইস্যুতে একগ্রুপের অবস্থান ও অপর গ্রুপের বর্জণের ঘোষনায় দু‘পক্ষের হাতাহাতি, ধাক্কাধাকিতে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অপর দিকে দু‘গ্রুপের সমর্থণে ক্যাম্পাসের বাইরে প্রধান দু‘গেটে স্থানীয় যুব-ছাত্রলীগসহ আন্দোলনকারিদের স্বজনসহ এলাকাবাসি বিক্ষোভ প্রদর্শণ করায় ক্যাম্পাস ও বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অনাকাঙ্খিত সহিংস পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে ও বাইরে থম থমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্যাম্পাস সূত্রে জানাযায়, তিনটি পর্যায়োন্নয়ন ইস্যুতে পবিপ্রবি কর্মকর্তা এসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াজকুরুনীর নেতৃত্বে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ঐক্যবদ্ধ করে গত ৩০ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে লাগাতার কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু হয়।
আন্দোলনের ১০তম দিনে রেজিষ্ট্রার অপসারণের ঘোষনা দিলে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তির সৃষ্টি হয়। এসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েলের সমর্থিত কর্মকর্তারা গতকাল বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট শুরু করলে রেজিষ্ট্রার ড. কামরুল ইসলাম সমর্থিত গ্রুপ ইস্যু পাল্টানোর প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলন বর্জণের ঘোষনা দিলে দু‘গ্রুপে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি, হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।
এখবর মুহুর্তেই বাইরে ছড়িয়ে পড়লে রেজিষ্ট্রার সমর্থিত স্থানীয় ছাত্র ও যুবলীগসহ স্বজন ও এলাকাবাসি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটে জড়ে হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে ও আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারিতের প্রতিরোধের ঘোষনা দেয়। অপর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম গেটে সাইদুর রহমান জুয়েল সমর্থিত আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একাংশ পাল্টা রেজিষ্ট্রার বিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শণ করতে থাকে। ক্যাম্পাস ও বাইরে এমন ত্রি-মুখী বিক্ষোভ ও কঠর অবস্থানের কারণে ক্যাম্পাস ও বাইরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এমন উত্তেজনাকর ও থমথমে পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহিংসতার আশংকায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। অফিসার্স এসেসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দাবি দাওয়া বাস্তবায়নের প্রধান বাঁধা ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার কামরুল ইসলাম।
তাই তাকে (রেজিষ্ট্রার) সরাতে না পারলে দাবি আদায় হবে না-একারনেই রেজিষ্ট্রার অপসারণের একদফা দাবিতে আন্দোলন করা হচ্ছে। কারা হামলা করেছে এমন প্রশ্নে জুয়েল বলেন, প্রশাসনে তোষামোদকারি দূর্ণীতিবাজ এবং রেজিষ্ট্রারের চিহ্নিত কয়েকজন চামচা আন্দোলন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে এবং প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছে।
অ্যাসোসিয়েসনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: জসিম উদ্দিন বাদল হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পর্যায়োন্নয়ন ইস্যুতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনে নামিয়ে ব্যক্তি আক্রোশে তারা ইস্যু পরিবর্তণ করায় আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। এসময় তাদের সাথে উত্যপ্ত বাক্য বিনিময় ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটলে আমরা চলে এসেছি।
এদিকে ত্রি-মুখী বিক্ষোভে ক্যাম্পাসের উত্তেজনা কর পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় পটুয়াখালী জেলা আ‘লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা ভিপি আবদুল মান্নান, দুমকি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতা বৈঠকে বসেছেন।
আরও পড়ুনঃ ফরাসি কাপ থেকে পিএসজির বিদায়