মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩, ১০:২১ অপরাহ্ন

বই উৎসব সারা পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে : শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৪৭ বার পঠিত

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন বছরের প্রথম দিন সারাদেশে একযোগে বই উৎসব পালিত হচ্ছে। এটা সারা পৃথিবীতে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যেখানে দেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থী বই উৎসবে যোগ দিয়ে নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। এই বই উৎসব সম্ভব হয়েছে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কারণেই, আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যার কাছে কৃতজ্ঞ।

আরও পড়ুনঃ১৪ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভ চুরি মামলার প্রতিবেদন

রোববার (১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কেন্দ্রীয় বই উৎসবে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা বিগত ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। এটা পৃথিবীর যে কোনো দেশের জন্য অচিন্তনীয় ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বই উৎসবের কাজটি সফলতার সঙ্গে করে চলেছি। এর মাধ্যমে  শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার যেমন আমরা রোধ করতে পেরেছি তেমনি বাবা-মায়েদের ওপরও বই কেনার ভার আর থাকছে না। নতুন বই একেবারে প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা হাতে পেয়ে যখন বাড়ি ফিরে যায় এটা দেখে আমাদেরও ইর্ষা হয়, কেননা আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন বছরের অর্ধেক চলে গেলেও বই পেতাম না। এখন শিক্ষার্থীদের আনন্দের সঙ্গে আমরাও আনন্দে ভাসি।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পেরেছি। এখন প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন স্মার্ট বাংলাদেশের। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিক হবে স্মার্ট নাগরিক, সরকার হবে স্মার্ট সরকার, অর্থনীতি হবে স্মার্ট অর্থনীতি, সমাজ হবে স্মার্ট সমাজ, এগুলো গড়তে যা দরকার তা হলো স্মার্ট শিক্ষা। আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশনায় নতুন শিক্ষাক্রম তৈরির মাধ্যমে সেদিকেই এগিয়ে চলছি।

দীপু মনি বলেন, আজকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির যে বইগুলো বিতরণ করা হয়েছে, সেগুলো নতুন শিক্ষাক্রমের। নতুন শিক্ষাক্রমে আমরা আলোর পথে তৈরি করেছি। সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদের পরামর্শ নিয়ে সকলের অংশগ্রহণে আমরা এমন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি, যেখানে শিক্ষা হবে আনন্দময়, শিক্ষায় কোনো পরীক্ষা ভীতিতে শিক্ষার্থীরা সারাদিন ভীত থাকবে না। তবে পরীক্ষা থাকবে যা ধারাবাহিক মূল্যায়নের ভিক্তিতে একটি অংশ হবে। করে করে শিখবে, কোনো মুখস্ত বিদ্যার বালাই থাকবে না। সক্রিয় শিখন হবে, অভিজ্ঞতা ভিক্তিক শিখন হবে, এর মধ্যে জীবনব্যাপী শিক্ষার যে পথ আজ সারাবিশ্ব খুলে দিতে চায় প্রতিটি মানুষদের জন্য তা আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরও খুলে যাবে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক হবে জাতির পিতা যেমনটি চেয়েছিলেন শুধু প্রযুক্তি বান্ধব নয়, প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবক হতে হবে। মানবিক মানুষ এবং সৃজনশীল মানুষ হতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান প্রমুখ।

সকাল থেকে বই উৎসবে যোগ দেয় কাপাসিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের হাজারো শিক্ষার্থী। সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষকরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্কুল মাঠে শিক্ষামন্ত্রী সবাইকে নিয়ে বেলুন উড়িয়ে দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।

বই উৎসবে যোগ দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে মঞ্চে বক্তব্য দেয় কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা. ইলমা। ইলমা বলে, বই ছাড়া শ্রেণিকক্ষ, আত্মা ছাড়া দেহ একই। আজ বছরের প্রথম দিন হাতে বই পেয়ে আমরা সবাই আনন্দিত।

প্রসঙ্গত, গাজীপুর জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৫১ জন শিক্ষার্থীর হাতে ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৩৪টি পাঠ্যপুস্তক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৬ লাখ ৯২ হাজার ৭৩০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে মোট ৮৭ লাখ ৭৬ হাজার ৬৮৯টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃসবাই মিলে শেখ হাসিনাকে উৎখাতে উঠে পড়ে লেগেছে:কাদের

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..