ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমন সংগ্রহ শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আমন সংগ্রহের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে খাদ্যগুদামের সামনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ জাকারিয়া মোস্তফা।
আরও পড়ুনঃসেতুর অভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এলাকাবাসী
এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ ইয়ামিন হোসেন, সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সজীব কাউছার, জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলায় এবছর ১৭ হাজার ১৭৬ আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চুক্তির পরিমাণ ১৫ হাজার ৬০৬ মেট্রিক টন। জেলার নয় উপজেলার মধ্যে ছয়টিতে থাকা ১৬৭ টি লাইসেন্সধারী চালকলের মধ্যে ৯১ চালকল মালিক সংশ্লিষ্টদের সাথে আমন দেওয়ার চুক্তি করেছে।
এবার আমন মৌসুম চলাকালে সিলেটে ব্যাপক বন্যা হওয়ায় এবার সংগ্রহে প্রভাব পড়েছে। আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চালকল মালিকদের কাছ থেকে সরকারিভাবে যে চাল সংগ্রহ করা হয় সেটি আসে সাধারণত সিলেট অঞ্চলের হাওড় এলাকা থেকে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ২৬টি অটোমেটিক চালকলের মধ্যে সব কয়টি আমন দেওয়ার বিষয়ে চুক্তি করেছে। ১৪১ টি হাস্কিং ও মেজর চালকলের মধ্যে ৬৫টি চালকল চুক্তি করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থেকে ৫১১.৯৮০ মেট্রিক টন, বিজয়নগর থেকে ৩৪১.৮২০ মেট্রিক টন, আশুগঞ্জ থেকে ১৪২৩৩.০৮০ মেট্রিক টন, কসবা থেকে ৩৪৪.৯৭০ মেট্রিক টন, সরাইল থেকে ১৭৪.২১০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের চুক্তি করা হয়। প্রতি কেজি চাল সংগ্রহ করা হয় ৪২ টাকা কেজি দরে।
সূত্রটি আরো জানায়, ১৭ নভেম্বর থেকে চাল সংগ্রহে চুক্তির কাজ শুরু হয়। চুক্তির নির্ধারিত সময় ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র একজন চালকল মালিক ২০.৫ টন আমন দিয়ে চুক্তি করে। এ অবস্থায় ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়িয়েও চুক্তির লক্ষ্যমাত্র পূরণ সম্ভব হয়নি। ওই সময় পর্যন্ত ২৫ জন মিল মালিক ৭০৪ মেট্রিক টন চাল দেওয়ার চুক্তি করেন। এরই মধ্যে উদ্যোগী হন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম। ১৩ ডিসেম্বর তিনি চালকল মালিকদের সাথে বৈঠক করেন। ওই বৈঠক ফলপ্রসূ হলে ৯১ চালকল মালিক ১৫৬০৬.০৬০ মেট্রিক টন চাল দেওয়ার চুক্তি করে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম সাংবাদিকদের জানান, ‘জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে আমন সংগ্রহের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার পর চালকল মালিকদের সাথে নিয়ে বৈঠক করি। নিজেদের লোকসান হবে তারা বললেও শেষ পর্যন্ত চুক্তি করায় চালকল মালিকদেরকে ধন্যবাদ জানাই। জেলার চাল সংগ্রহে সুনামসহ নানা দিক চিন্তা করে মূলত তারা চাল দিতে রাজি হয় ।