‘হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে, দেখা হবে তোমায়-আমায় অন্য গানের সুরে।’ দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পী কবির সুমনের এই গান কম-বেশি সবারই শোনা। এই গান অনুপ্রেরণার। যার মাধ্যমে সুমন বলেছেন, হাল না ছাড়তে। কখনো না কখনো জয় আসবেই। মানব জীবনে তো বাধা-বিপত্তি আসবেই। কিন্তু থেমে গেলে তো হবে না।
আরও পড়ুনঃঠাকুরগাঁওয়ে সবজির সরবরাহে বাজারে স্বস্তি
নিজ উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। অনেকেই আছেন যারা নানা ঝড়-ঝাপটা থাকা সত্ত্বেও জীবন যুদ্ধে হার না মেনে এগিয়ে যাচ্ছেন নিজ প্রচেষ্টায়।
এমনই একজন দিনাজপুর সদর উপজেলার মেডিক্যাল মোড়ের বাসিন্দা মো. সুমন ইসলাম (৩৯)। দিনাজপুর থেকে ঠাকুরগাঁও, অপেক্ষা কখন ট্রেন আসবে। দিনাজপুর থেকে ট্রেনে করে ঠাকুরগাঁও স্টেশনে। আবার কখনো দিনাজপুরগামী ট্রেনের অপেক্ষা। দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশন ছাড়া কখনো কোথাও অনুষ্ঠান বা খেলা হলে চলে যায় সেখানে। ফেরী করে বিক্রি করেন মুখরোচক নানা খাবার।
দৈনিক যা বিক্রি করেন তা দিয়েই চলে যায় তার সংসার। জীবিকার তাগিদে স্টেশন-স্টেশন ফেরি করেই সংসারের হাল টানছেন তিনি। তবুও নিরাশ হননি। বেছে নেননি ভিক্ষাবৃত্তির পথ। সংসারে নেই সন্তান , স্বামী-স্ত্রীর ছোট সংসার।
কথা হয় সুমনের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সন্তান নেই আমার স্ত্রী এবং আবার ছোট একটা পরিবার। আমার হাত নেই তাতে কী হয়েছে? ইচ্ছাশক্তিই বড়। পরিবারের ভরন-পোষণ জোগাতে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি স্টেশনে থেকে স্টেশনে ফেরিকরা।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন স্টেশন থেকে স্টেশন ফেরী করে বিক্রি করি, আমার শরীরের গঠন দেখে অনেকেই ক্রয় করতে চায়না। আবার অনেকে দয়া করে কিনে নেয়। সারাদিনে যা বিক্রি করি তা দিয়েই সংসার চলে।’
ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশনে একতা এক্সপ্রেস এর টিটির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিন ওই ফেরীওয়ালার সাথে দেখা হয়। মায়াবী চেহারা আর পরিশ্রমী ওই মানুষটার জন্য। কোনো কোনো সময় চোখে অশ্রু চলে আসে। তাই দেখা হলেই যাত্রীদের বলি ভাইয়ের কাছে অল্প কিছু হলেও সবাই কেনার চেষ্টা করবেন।’