বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামালের ‘রণাঙ্গনের ডায়েরি’ ও ‘শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল: দেশপ্রেম ও তারুণ্যের দীপ্ত শিখা’ শীর্ষক দুটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুনঃকারখানা ভেঙে গুড়িয়ে দিলেন প্রশাসন
সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে সোমবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসস্থ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বই দুটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রমুখ।
রণাঙ্গনের ডায়েরি: শেখ জামাল ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রশিক্ষণকালীন সময়ে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন, বইটিতে তার একটি ধারাবাহিক বর্ণনা আছে। এগুলো তার নিজের হাতে লেখা ডায়েরি থেকেই ছাপানো। এছাড়া শেখ জামাল যখন স্যান্ডহার্স্ট মিলিটারি একাডেমিতে কমিশনের জন্য যান, তখন নিজের জীবনের ওপর একটি মূল্যায়ন লিখেছিলেন, সেটিও এই বইটিতে যুক্ত করা হয়েছে।
বইটির সম্পাদক ও প্রকাশক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান। ৪টি ছবি ও ১২২ পৃষ্ঠায় জামালের ডায়েরির বর্ণনাসহ মোট ১৩৬টি পৃষ্ঠা রয়েছে বইটিতে।
প্রসঙ্গত, মেজর জেনারেল মজিবুর রহমান ২০২১ সালে শান্তিকালীন সর্ব্বোচ্চ পুরস্কার ‘সেনাবাহিনী পদক’-এ ভূষিত হন। ২১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ পদক প্রদান করেন।
শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল: দেশপ্রেম ও তারুণ্যের দীপ্ত শিখা: শেখ জামালকে নিয়ে প্রকাশনার সংখ্যা খুবই অল্প। কিন্তু পাঠকমহলে এই নির্ভীকচিত্ত তরুণ সম্পর্কে জানার ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। শেখ হাসিনা তার অকাল প্রয়াত ছোটভাই জামালকে নিয়ে দ্বৈত ভাষায় রচিত এই বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সম্পাদিত গ্রন্থটি সেই চাহিদা মেটানোরই ক্ষুদ্র প্রয়াস। বইটির প্রকাশক ইয়াসিন কবীর জয়। প্রচ্ছদ ও গ্রন্থপরিকল্পনা করেছেন শাহরিয়ার খান বর্ণ।
শেখ জামাল মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। পরে যুগোস্লাভিয়ার সামরিক একাডেমি এবং যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা সামরিক একাডেমি স্যান্ডহার্স্ট থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টে লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগ দেন। তবে তার কর্মজীবন দীর্ঘায়িত হতে পারেনি। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে শহীদ হন। শেখ জামালের জীবন এবং কর্ম খুব বেশি আলোচিত হয়নি। তিনি ছিলেন দেশপ্রেমিক, সাহসী এবং সহৃদয় চিত্তের মানুষ।
জয়ীতা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইটিতে শেখ জামালের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি বড় নিবন্ধ রয়েছে। এর পাশাপাশি আছে ভারতের সমরবিদ জেনারেল সুজন সিং উবানের চিঠি। রিপোর্ট আছে দুটো, এর একটি শেখ হাসিনার ঢাকা রেসিডেনন্সিয়াল মডেল কলেজে থেকে শেখ জামালের মাধ্যমিক পরীক্ষার সনদ গ্রহণ নিয়ে। অপরটি সেনাবাহিনীর তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শেখ জামালের সামরিক স্মারক প্রদান সম্পর্কে।
গ্রন্থটিতে শেখ জামালের ৪৪টি আলোকচিত্র রয়েছে, যার বেশিরভাগই দুর্লভ। কিছু ছবি কামরুল হুদা, আলহাজ জহিরুল হক ও মোহাম্মদ আলমের। বাকিগুলো নেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের জাতির জনক গ্রন্থ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা গ্রন্থ ও পারিবারিক অ্যালবাম থেকে।
আরও পড়ুনঃকারখানা ভেঙে গুড়িয়ে দিলেন প্রশাসন